শিরোনাম

Space for ads

১৩ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কার্যক্রমে গতি নেই

 প্রকাশ: ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন   |   চিকিৎসা

১৩ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কার্যক্রমে গতি নেই
Space for ads

নিয়োগ নেই বেশির ভাগ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। যেখানে আছে সেখানেও যান না চিকিৎসকরা। কাগজে-কলমে বছরের পর পর পদায়ন থাকলেও চেনে না ওই এলাকার মানুষ। এভাবেই চলছে ঝিনাইদহের ১৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারণে সেবা পাচ্ছে না প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। গ্রাম থেকে সেবা নিতে ছুটতে হয় উপজেলা বা জেলা হাসপাতালে।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের দেয়া তথ্যমতে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা বাদে বাকি পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো হলো সদর উপজেলার হরিশংকরপুর, সাধুহাটি; কোটচাঁদপুরের পাঁচলিয়া, তালসার, জয়দিয়া; মহেশপুরের তালসার, মান্দারবাড়িয়া, শ্যামকুড়, যাদবপুর; শৈলকুপার কাঁচেরকোল, আবাইপুর ও কালীগঞ্জের বারোবাজার ও বলরামপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

এ কেন্দ্রগুলো ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে আসে। স্বাস্থ্য বিভাগ আরো জানায়, এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে হরিশংকরপুর, কাঁচেরকোল, পাঁচলিয়া, তালসার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক পদায়ন রয়েছে। অন্যগুলোয় পদ শূন্য রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোয় পদায়ন থাকলেও সেখানে যান না চিকিৎসক। সহকারী মেডিকেল অফিসারের পদায়ন থাকলেও নানা অজুহাতে সেখানে যান না অনেকে। একই সঙ্গে ভবনগুলোও বেহাল। সর্বশেষ ২০১৯ সালে কিছুটা মেরামত করা হলেও অনেক উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জরাজীর্ণ অবস্থা। সেখানেই সেবা দিচ্ছে কর্মকর্তারা। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সেবা পাচ্ছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সেখানে একজন অফিস সহায়ক চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। সেখানে দেখা মেলেনি সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারেরও। ঠাণ্ডা জ্বরের ওষুধ দিচ্ছেন অফিস সহায়ক। অনেক রোগীকে ফেরত যেতে দেখা গেছে।

এদিকে চিকিৎসকসহ জনবল পদায়ন না হওয়ায় দেড় যুগের বেশি সময় আগে বন্ধ হয়ে গেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। খুলে পড়ছে ইট ও পলেস্তারা। চুরি হয়ে গেছে জানালা-দরজা। পরিণত হয়েছে জঙ্গল আর গোয়ালে। অথচ সরকারি খাতায় এখনো চালু উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি।

একইভাবে সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সেখানেও কোনো মেডিকেল অফিসার নেই। সেখানেও নামমাত্র চলছে চিকিৎসা সেবা।

সেবা নিতে আসা নাজমা খাতুন নামের এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমরা এর আগে এখানে একজন বড় ডাক্তার দেখেছি। তিনি মাঝে মাঝে এসে আমাদের সেবা দিতেন। অনেক বছর হয়ে গেল তিনি চলে গেছেন। এরপর আর কাউকে তো দেখি না।’

রাশেদ নামের এক রোগী বলেন, ‘উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এলে শুধু জ্বর আর ঠাণ্ডার ওষুধ পাই। শুনেছি নাকি এখানে ডাক্তারের নিয়োগও আছে। কিন্তু তাকে তো পাই না। আমরা চাই এখানে একজন মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেয়া হোক, যিনি প্রতিনিয়ত আমাদের সেবা দেবেন।’

কাঁচেরকোল ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক নাহিদ ইমরান বলেন, ‘আমার পদায়ন কাঁচেরকোল থাকলেও ডেপুটেশনে রাখা হয়েছে ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালে। শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা দিতেই হিমশিম খেতে হয়। কাঁচেরকোল জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। শিশু হাসপাতালে সেবা দিয়ে অত দূরে কীভাবে যাব?’

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মিথিলা ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের জেলায় চিকিৎসক সংকট আছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তারাও আশ্বাস দিয়েছেন জেলায় চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে। আশা করি নিয়োগ দেয়া হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।’

BBS cable ad