Space for ads

অর্থাভাবে বন্ধ চোখ হারাতে বসা সনজুর চিকিৎসা

 প্রকাশ: ২০ অগাস্ট ২০২৪, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন   |   চিকিৎসা

অর্থাভাবে বন্ধ চোখ হারাতে বসা সনজুর চিকিৎসা
Space for ads
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফার বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে চোখ হারাতে বসেছেন সনজু মিয়া (২৬)। তিনি ডান চোখে দেখতে পেলেও বাঁ চোখে মোটেও দেখতে পাচ্ছেন না। গুলিবিদ্ধ হয়ে টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না তার পরিবার।

সনজুর বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামে। ওই গ্রামের মো. ইয়াসিন মিয়ার ছেলে সনজু। তিনি শহরের একটি ওয়ার্কশপে শ্রমিকের কাজ করতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত ৪ আগস্ট সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের সময় গাইবান্ধা শহরে পুলিশের ছররা গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। বর্তমানে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিছানায় দিন কাটছে তার। প্রায় বিনা চিকিৎসায় গুলিবিদ্ধ বাঁ চোখ স্বাভাবিক না হওয়ার আশঙ্কা করছে তার পরিবার। ছেলের অবস্থার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা মনজু বেগম। ছেলের চিকিৎসার জন্য সরকার ও দেশের মানুষের কাছে সহায়তা কামনা করেন। তিনি জানান, ঘটনার দিন পুলিশের ছোড়া ৪টি বুলেট লাগে সনজুর শরীরে। এর মধ্যে তার বাঁ চোখে ৩টি এবং হাতে একটি বুলেট লাগে।

শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ওইদিনই রংপুরের গ্লোবাল আই অ্যান্ড হেলথ কেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দুদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সনজুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় বাংলাদেশ আই হসপিটালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসকরা সনজুর চোখ থেকে একটি বুলেট সফলভাবে অপসারণ করতে পারলেও বাকি দুটি বুলেট এখনও চোখের ভেতরে রয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। তাকে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

আহত সনজু জানান, ঘটনার দিন দেখলাম যে আশপাশে সবাই মিছিলে যাচ্ছে। সে জন্য আমিও আর থাকতে পারিনি, মিছিলের স্লোগানে কণ্ঠ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি। মিছিলটি গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে গেলে পুলিশ অতর্কিতভাবে গুলি শুরু করে। এসময় বুঝতে পারি চোখে কিছু একটা লেগেছে, এরপর আর আমি কিছু বলতে পারি না। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। আমার বাম চোখে তিনটি বুলেট লাগে। ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে একটি বুলেট অপসারণ করা হলেও বাকি দুটি এখনও রয়ে গেছে। আমি বাম চোখ দিয়ে কিছু দেখতে পারছি না এবং প্রচ- ব্যথা অনুভব করছি। এই চোখ দিয়ে আদৌ দেখতে পারব কি না জানি না।

সনজুর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেটা একটা ওয়ার্কশপে শ্রমিকের কাজ করত। সনজু পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ওর আয় দিয়েই আমাদের পরিবারটা চলত। এখন যে কি হবে বুঝতে পারছি না। ডাক্তার যেভাবে বলেছে, তাতে ওর চোখটা ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। উন্নত চিকিৎসা করালে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এই দরিদ্র পরিবারের পক্ষে উন্নত চিকিৎসার ব্যয় বহন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তিনি সমাজের বিত্তবান ও সহানুভূতিশীল ব্যক্তিদের কাছে সনজুর চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসার আবেদন করে বলেন, সনজুর দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা না গেলে তার এবং আমার পরিবারের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাবে।
BBS cable ad