মশা নিধন কার্যক্রমে স্থবিরতা, ঘরে-বাইরে আতঙ্ক
রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মশার উপদ্রব। দিনে মশার উৎপাত কিছুটা কম থাকলেও সন্ধ্যা নামলেই টিকে থাকা দায়। ভুক্তভোগীরা বলছে, অফিস, বাসাবাড়ি বা দোকান, ঘরে কিংবা বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ঢাকার দুই মেয়র নিখোঁজ থাকায় দুই সিটি করপোরেশনের বিশেষ মশা নিধন কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। নিয়মিতভাবে কাজ করছে না মশক নিধন কর্মীরা। অভিযান পরিচালনা কার্যক্রম থেমে গেছে। যদিও সোমবার ঢাকার দুই মেয়রকে অপসারণ করেছে সরকার।
এ ছাড়াও লার্ভিসাইড স্প্রে এবং ফগিংসহ সিটি করপোরেশনের নিয়মিত মশাবিরোধী ব্যবস্থাগুলোও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে রাজধানীতে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। একইসঙ্গে নীরবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরে থেকেও আসতে শুরু করেছে রোগী, যাদের অধিকাংশই জটিল অবস্থায় আসছে বলে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি বছরে জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ৭৪ জনের মৃত্যু এবং আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৮১৬ জন। আর গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের একই সময়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছিল ৯৭ হাজার ৮৬০ জন। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এবার মৃত্যুর হার প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। কিন্তু আক্রান্তের হার প্রায় ১০ শতাংশ কম। যদিও ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদ বলছেন, সারা বিশে^ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার প্রজাতির মশা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০০ প্রজাতি রোগ ছড়ায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ে মশা থেকেই। সেগুলোর মধ্যে কিছু রোগ প্রাণঘাতী। আর বাংলাদেশে ১২৩ প্রজাতির মশার খোঁজ পাওয়া গেছে। ঢাকাতেই এর ১৪টি প্রজাতির মশার বিচরণ রয়েছে। বাংলাদেশে মশাবাহিত পাঁচটি রোগের বিস্তার ঘটেছেÑম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জাপানিজ এনসেফালাইটিস।
তাদের মতে, বিগত কয়েক বছরের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বর্ষার মূল মৌসুমের পর ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। মূলত এডিসের ভর মৌসুম হচ্ছে জুন থেকে সেপ্টেম্বর। আবার দেশজুড়ে কয়েক দিন ধরে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কখনো মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। তাই আরও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার শঙ্কা জাগাচ্ছে। আর ডেঙ্গু শুধু এখন ঢাকা কেন্দ্রিক নয়, বরং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সুতরাং ডেঙ্গু প্রতিরোধে কারিগরিভাবে সঠিক ও বাস্তবায়নযোগ্য একটি কর্মকৌশল দ্রুত প্রণয়ন করা জরুরি। একইসঙ্গে মশার বংশবিস্তার রোধ ও পরিচ্ছন্নতা এবং জনসচেতনতা বাড়াতে তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এই অবস্থায় মশাবাহিত রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রতি বছর ২০ আগস্ট পালিত হয় ‘বিশ^ মশা দিবস’। ১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ড. ডোনাল্ড রস আবিষ্কার করেন, স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া ছড়ায়। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত স্মরণে ২০ আগস্ট মশা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৬৬ জন। এই নিয়ে চলতি মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৬জন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় মশার ঘনত্ব বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
ঢাকার দুই সিটির বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়মিত নয় মশক নিধন কর্মীরা। এমনকি শিডিউলে যেসব মশক কর্মীর থাকার কথা, তারা ওইসব এলাকায় লার্ভিসাইড এবং ফগিং করেননি।
যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা হামিদ বিশ^াস সময়ের আলোকে বলেন, গত ১৫ দিনে কোনো মশক কর্মীকেই দেখিনি ফগিং করতে কিংবা সকালে লার্ভিসাইড করতে।
এ ছাড়াও লার্ভিসাইড স্প্রে এবং ফগিংসহ সিটি করপোরেশনের নিয়মিত মশাবিরোধী ব্যবস্থাগুলোও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে রাজধানীতে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। একইসঙ্গে নীরবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরে থেকেও আসতে শুরু করেছে রোগী, যাদের অধিকাংশই জটিল অবস্থায় আসছে বলে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি বছরে জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট ৭৪ জনের মৃত্যু এবং আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার ৮১৬ জন। আর গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের একই সময়ে মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছিল ৯৭ হাজার ৮৬০ জন। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে এবার মৃত্যুর হার প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। কিন্তু আক্রান্তের হার প্রায় ১০ শতাংশ কম। যদিও ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদ বলছেন, সারা বিশে^ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার প্রজাতির মশা রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০০ প্রজাতি রোগ ছড়ায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এখন পর্যন্ত ২০টির মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ে মশা থেকেই। সেগুলোর মধ্যে কিছু রোগ প্রাণঘাতী। আর বাংলাদেশে ১২৩ প্রজাতির মশার খোঁজ পাওয়া গেছে। ঢাকাতেই এর ১৪টি প্রজাতির মশার বিচরণ রয়েছে। বাংলাদেশে মশাবাহিত পাঁচটি রোগের বিস্তার ঘটেছেÑম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া এবং জাপানিজ এনসেফালাইটিস।
তাদের মতে, বিগত কয়েক বছরের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বর্ষার মূল মৌসুমের পর ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। মূলত এডিসের ভর মৌসুম হচ্ছে জুন থেকে সেপ্টেম্বর। আবার দেশজুড়ে কয়েক দিন ধরে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার কখনো মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। তাই আরও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার শঙ্কা জাগাচ্ছে। আর ডেঙ্গু শুধু এখন ঢাকা কেন্দ্রিক নয়, বরং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সুতরাং ডেঙ্গু প্রতিরোধে কারিগরিভাবে সঠিক ও বাস্তবায়নযোগ্য একটি কর্মকৌশল দ্রুত প্রণয়ন করা জরুরি। একইসঙ্গে মশার বংশবিস্তার রোধ ও পরিচ্ছন্নতা এবং জনসচেতনতা বাড়াতে তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এই অবস্থায় মশাবাহিত রোগ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রতি বছর ২০ আগস্ট পালিত হয় ‘বিশ^ মশা দিবস’। ১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ড. ডোনাল্ড রস আবিষ্কার করেন, স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া ছড়ায়। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত স্মরণে ২০ আগস্ট মশা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৬৬ জন। এই নিয়ে চলতি মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৯৬জন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় মশার ঘনত্ব বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
ঢাকার দুই সিটির বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়মিত নয় মশক নিধন কর্মীরা। এমনকি শিডিউলে যেসব মশক কর্মীর থাকার কথা, তারা ওইসব এলাকায় লার্ভিসাইড এবং ফগিং করেননি।
যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা হামিদ বিশ^াস সময়ের আলোকে বলেন, গত ১৫ দিনে কোনো মশক কর্মীকেই দেখিনি ফগিং করতে কিংবা সকালে লার্ভিসাইড করতে।