ফের চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, রোগ নির্ণয়ে দেরি বাড়াচ্ছে জটিলতা
শুধু শহর নয়, প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনপদে ডেঙ্গু চোখ রাঙালেও মশক নিধনে নেই তেমন কোনো তৎপরতা। অন্যদিকে আক্রান্ত হলেও রোগ নির্ণয়ে দেরি হওয়ায় জটিলতা বাড়ছে অনেক রোগীর।
দেশজুড়ে কয়েক দিন ধরে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। আর মৌসুমের এ বৃষ্টিতে শঙ্কা জাগাচ্ছে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের।
ডেঙ্গুর সম্ভাব্য ঝুঁকি বিবেচনায় শুরু হয়েছে নানা তৎপরতা। কীটনাশক ছিটিয়ে মশা মারার পাশাপাশি মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। করা হচ্ছে জেল-জরিমানাও। তবে দৃশ্যমান এসব তৎপরতার অধিকাংশই শহরকেন্দ্রিক। ডেঙ্গু কি শুধুই শহুরে রোগ?
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, চলতি বছর প্রথম ছয় মাসে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৬৫ শতাংশ। অথচ গত বছর এ সময়ে ঢাকার বাইরে রোগী ছিল ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। ২০২২ সালে ছিল ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ ঢাকার বাইরে আক্রান্তের হার বেড়েছে প্রায় তিন গুণ।
এমন প্রেক্ষাপটে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ঢাকার বাইরে থেকে আসতে শুরু করেছে রোগী, যাদের অধিকাংশই জটিল শারীরিক সমস্যা নিয়ে আসছেন। কারণ রোগ নির্ণয়ে কালক্ষেপণ বলছেন চিকিৎসকরা।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান হসপিটালনিউজ২৪ডট কম কে বলেন,ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীদের অধিকাংশ সময় সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় হয় না। পরে বিষয়টি যখন তারা জানতে পারেন, তখন তারা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যান।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শুধু শহরকেন্দ্রিক তৎপরতার মধ্যে না থেকে কাজ করতে হবে দেশব্যাপী।
এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, আমরা ডেঙ্গু বলতেই বুঝি, ঢাকা শহর! কিন্তু এই ধারণা থেকে সরে আসতে হবে। ২০২৩ সালে মূল ঝুঁকিটা ছিল ঢাকার ২ কোটি মানুষ। আর এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষই ঝুঁকিতে রয়েছেন। সুতরাং আমাদের কারিগরিভাবে সঠিক ও বাস্তবায়নযোগ্য একটি কর্মকৌশল দ্রুত প্রণয়ন করা দরকার।
চলতি বছর এরই মধ্যে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছড়িয়েছে সাড়ে তিন হাজার। মারা গেছেন ৪৪ জন।