শিরোনাম

Space for ads

কর্মস্থলে উপস্থিত থাকে না সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ৪০-৫০% কর্মী

 প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন   |   চিকিৎসা

কর্মস্থলে উপস্থিত থাকে না সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ৪০-৫০% কর্মী
Space for ads

সারা দেশের সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের বিভাগভিত্তিক দৈনিক উপস্থিতি বা হাজিরার হার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্যাশবোর্ডে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। এ পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কর্মীদের গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ প্রতিদিনই কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থাকছে।

সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শেষদিন গত বৃহস্পতিবারের (১৩ মার্চ) তথ্য অনুযায়ী, এদিন সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মী সবচেয়ে বেশি উপস্থিত ছিল সিলেট বিভাগে। সেদিন কর্মস্থলে উপস্থিত ছিল বিভাগটির ৬১ দশমিক ৭৪ শতাংশ কর্মী। সবচেয়ে কম ছিল রংপুরে। বিভাগটির ৪৭ দশমিক ১৬ শতাংশ কর্মী সেদিন কর্মস্থলে হাজিরা দিয়েছে। এছাড়া বরিশালে ৫৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৫৭ দশমিক ৫৪, ঢাকায় ৫১ দশমিক ৭৪, খুলনায় ৫৯ দশমিক ৪১, ময়মনসিংহে ৫৮ দশমিক ৭৬ ও রাজশাহীতে ৪৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ কর্মী উপস্থিত ছিল। ওইদিন সারা দেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ৯২ হাজার ৫৫৩ স্বাস্থ্যকর্মীর তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৪১ হাজার ৭২৪ জন বা ৪৫ শতাংশের কিছু বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্বাস্থ্য খাত এমনিতেই কর্মী সংকটে ভুগছে। এর মধ্যে হাসপাতালগুলোয় প্রায় অর্ধেক কর্মীই থাকে অনুপস্থিত। দেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোয় চিকিৎসক, নার্স এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনুপস্থিতির সমস্যা কাটাতে সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু এগুলোর কোনোটিই সেভাবে কাজে আসেনি। সর্বশেষ শতভাগ হাজিরা নিশ্চিত করতে বেশির ভাগ হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোয় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা চালু করা হয়।

আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারলেও স্বল্প আয়ের মানুষের চিকিৎসার প্রধান ভরসা হলো সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো। কিন্তু পর্যাপ্তসংখ্যক কর্মীর অনুপস্থিতিতে এসব হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তি বহুলাংশে বেড়ে যায়।

দেশে হৃদরোগের চিকিৎসাসেবায় একমাত্র বিশেষায়িত সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এখানকার এক কর্মকর্তা জানান, ‘এখানকার বেশির ভাগ নার্স সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসেন না। অনেকে আবার আঙুলের ছাপ দিয়ে চলে যান। এ সমস্যাগুলো নার্সদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। এখানে এমনও অনেক নার্স কর্মরত আছেন, যারা একই সঙ্গে দুটি চাকরি করেন। দেশের সব হাসপাতালেই চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের সংকট রয়েছে। যারা নিয়োজিত আছেন, তাদেরও বড় একটি অংশের অনুপস্থিতি রোগীর ভোগান্তিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।’

স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় সাপ্তাহিক ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস রোববারে উপস্থিতির হার কিছুটা বেশি দেখা যায়। গত ৯ মার্চ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন কর্মীদের মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৩৪ হাজার ৬২০ জন। সে অনুযায়ী ওইদিনের হাজিরা তথ্যে পাওয়া মোট কর্মীর প্রায় ৩৮ শতাংশ ছিল অনুপস্থিত।

তবে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ দেখা যায় ছুটির দিনগুলোয়। এ সময় কোনো কোনো বিভাগে কর্মীদের উপস্থিতির হার ৫ শতাংশের নিচেও নেমে যায়।

BBS cable ad