চিকিৎসা নিয়ে শঙ্কায় গুলিবিদ্ধ রাসেলের পরিবার
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক দফায় দেশ থেকে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। আনন্দমিছিলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ বের হয়ে আসেন রাস্তায়। এসময় রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের প্রতিবন্ধী কর্মী গুলিবিদ্ধ হন শেরেবাংলা নগর থানার সামনে। মানসিক প্রতিবন্ধী মো. রাসেল ভালোভাবে বোঝেন না সবকিছু। আহত রাসেলকে তৎক্ষণাৎ শিক্ষার্থীরা নিয়ে যান নিটোর এর জরুরি বিভাগে, সেখানে গুলি বের করার পর শহিদ সহরোওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তারা আবারো নিটোর এর ফেরত পাঠালে সর্বশেষ জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইন্সটিটিউটে অপারেশন সম্পন্ন হয় রাসেলের।
চিকিৎসকরা জানান, রাসেলের মূত্রনালি ও রেকটামের কিছু অংশ ছিড়ে গেছে। প্রাথমিক অপারেশনের পর ক্ষত স্থান শুকালে তিন মাস পরে আবারো অপারেশন হবে তার। অপারেশনসহ হাসপাতালের যাবতীয় খরচ সরকারিভাবে বহন করা হলেও ঔষধ পথ্যের খরচের ভার এসে পড়েছে মা মোসা. রত্না খাতুনের ওপর। এরই মধ্যে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে তাদের।
রত্না খাতুন ও রফিকুল ইসলাম দম্পতির সন্তান মো. রাসেল। জন্ম থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী রাসেলকে নিয়ে মা রত্না খাতুন শেরপুরের নালিতাবাড়ি থেকে ঢাকায় আসেন। রফিকুল ইসলামের সঙ্গে নেই কোনো যোগাযোগ। সংসারের হাল ধরতে মামার সঙ্গে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব সিরাজ উদ্ দৌলা হলের ক্যান্টিনে ৫ হাজার টাকা বেতনে প্লেট ধোয়ার কাজ করতেন রাসেল।
৫ তারিখে জনতার আনন্দ মিছিলে যোগ দিলে মিছিল শেরেবাংলা নগর থানার সামনে পৌঁছালে গোলাগুলির মধ্যে পড়েন। গুলিটি রাসেলের কোমরের ডান পাশে লেগে আটকে যায়। তারপর এই হাসপাতাল থেকে ঐ হাসপাতাল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে খোঁজ পেয়ে সন্ধ্যায় হাসপাতালে এসে ছেলের এই অবস্থা দেখেন মা রত্না খাতুন।
বর্তমানে জনতা হাউজিংয়ের একটি ভাড়া বাসায় আছেন রাসেল ও তার মা। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক তার সহযোগিতা করছে। পাশাপাশি চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাহায্য করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন রাসেলের মামা আবু মুসা। তবে এখনো অনেক টাকার ঔষধ দরকার। আরো একটা অপারেশন করতে হবে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন রাসেলের মা-মামা।