স্বাস্থ্যখাতে বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদের অপসারণের দাবি
স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিগত সরকারের সুবিধাভোগীদের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসক ও কর্মচারীদের একটি অংশ। এ ছাড়া তাঁদের দুর্নীতি অনুসন্ধান করে বিচারেরও দাবি করেছেন তারা। ‘বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক-কর্মচারী আন্দোলন’- নামের ব্যানারে আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক-কর্মচারী আন্দোলন- বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনের বিরোধিতা করে রাজপথে মিছিলকারী ও বিগত ১৬ বছর স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। আগামী ২০ আগস্টের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও এর মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ সকল পরিচালক, ফ্যামিলি প্ল্যানিং মহাপরিচালক, নার্সিং অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সকল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, ইন্সটিটিউটের পরিচালক, উপপরিচালক, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সকল সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, হোস্টেল সুপার, সকল সরকারি হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটের পরিচালকসহ এসেনশিয়াল ড্রাগের এমডি/চেয়ারম্যান, স্বাস্থ্য ও প্ল্যানিংয়ের সকল বিভাগীয় পরিচালক, সকল সিভিল সার্জনের অপসারণ করে তাদের দুর্নীতি অনুসন্ধান করে ও বিচার দাবি করেন। এইসব প্রতিষ্ঠানে দেশপ্রেমিক ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে উপযুক্ত চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদায়ন করার জোর দাবি জানান।
এতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিগত সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার পোষ্যপুত্র বলে পরিচিত স্বাচিপ (স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ) নেতা, সাবেক আওয়ামী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ডানহাত বলে পরিচিত প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডিজিএসএইচএস বিগত ১৫ বছর যাবত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে স্বাস্থ্যখাতে নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য করেছেন। এই কাজে তার অন্যতম সহযোগী ছিল সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিকের ছেলে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অবৈধ আয়ের মাধ্যমে জাহিদ মালিকের ছেলে রাজধানীর বাড্ডায় একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিক বনে যান। সেই হাসপাতালে এই হাসপাতাল আওয়ামী মন্ত্রী, এমপি, আমলাদের জন্য ফ্রি ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করা হতো। তাঁর হাসপাতালে কথিত ভিআইপিদের ফ্রি ট্রিটমেন্টের বিনিময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিজের রাজত্ব কায়েম করেন। নিজের আসন পোক্ত করার জন্য তিনি প্রচলিত প্রথা ভেঙে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ডব্লিউএইচ এর রিজিওনাল ডিরেক্টর পদের জন্য লবিং করেন। এমনকি গত ৩ আগস্ট স্বাচিপ এর অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে শান্তি মিছিলে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পতনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভোল পাল্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং আহত ছাত্রদের চিকিৎসা নিশ্চিতের আশ্বাসসহ নানাভাবে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেন। এমনকি ছাত্রদের ব্যবহার করে তিনি এখন মহাপরিচালক হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই বিগত স্বৈরাচারের এই দোসরকে এখনই অপসারণ না করতে পারলে স্বাস্থ্যখাতে আবার আওয়ামী লুটপাট কায়েম হবে।
বিবৃতিতে মুখ্য সমন্বয়ক এ কে এম মহিউদ্দিন ভূইয়া (মাসুম) এবং সমন্বয়ক ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবীর জুয়েল, ডা. রেজানুর রহমান সোহেল ও ডা. জাকিয়া সুলতানা।