ঢামেকে জোড়া দুই শিশুর অস্ত্রপচারে অংশ নেন ৮২ চিকিৎসক
৮২ জন চিকিৎসকের অংশগ্রহণে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে বুকে-পেটে জোড়া লাগানো দুই শিশুকে পৃথক করা হয়েছে। শিশু দুটির নাম শিফা ও রিফা।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাহানুর ইসলাম।
বুকে ও পেটে জোড়া অবস্থায় গত বছরের ৭ জুন বরগুর বেতাগী উপজেলার বাদশা মিয়া-মাহমুদা বেগম দম্পতির দুই সন্তান জন্ম হয়। ঐ বছরের ২১ জুন তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডাক্তার সাহানুর ইসলাম বলেন, শিশু দুটির পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে দেখা যায়, তাদের হৃদপিণ্ডের পর্দা, সাধারণ যকৃত নালী, পোর্টাল শিরা, ক্ষুদ্রান্ত্রের কিছু অংশ জোড়া লাগানো। দুই জনে মাঝে একজন অপেক্ষাকৃত কম খাওয়া সত্ত্বেও তার ওজন বাড়ত। এরপরও অপারেশন পরবর্তী ফলাফল ভালো ছিল। এতসব সমস্যার মধ্যেও আমরা সফলভাবে পৃথক করতে পেরেছি শিশুদুটিকে। সবার সমন্বয়ে এবং একটি টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রায় ১০ ঘণ্টার অপারেশনে শিশু দুটিকে আলাদা করা হয়। অপারেশন শেষে তাদের আইসিইউতে (ভেন্টিলেটরে) রাখা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর রিফাকে ভেন্টিলেটর থেকে মুক্ত করা হয়। ৯ সেপ্টেম্বর শিফাকে ভেন্টিলেটর মুক্ত করা হয়। ১১ সেপ্টেম্বর শিফা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। পরে তাকে ন্যাশনাল হার্ড ফাউন্ডেশনের প্রধান শিশু কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক আরিফুজ্জামানের অধীনে রাখা হয়। সেখাকার সম্পূর্ণ খরচ হার্ড ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ বহন করে। সেখান থেকে শিফা ফেরত আসে ১৮ সেপ্টেম্বর। সেই থেকে শিশুটি ঢামেকের আইসিইতে রয়েছে।
রিফা পুরোপুরি সুস্থ আছে। চিকিৎসকরা জানান, রিফার রক্তে সংক্রমণ হয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে কিছু সময় লাগবে। তবে আইসিইউতে থেকে আজকালের মধ্যে তাকেও কেবিনে দিয়ে দেওয়া হবে।
শিফা-রিফার বাবা গার্মেন্টসকর্মী বাদশা মিয়া বলেন, আমি নিতান্ত গরিব মানুষ। আমার পক্ষে এ চিকিৎসা করানো সম্ভব হতো না। চিকিৎসক স্যাররা আমার শিশুদের জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করেছেন। আমার সন্তানদের চিকিৎসার জন্য সব খরচও দিয়েছেন তারা। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সবার কাছে শিফা ও রিফার জন্য দোয়া চাই।