পঙ্গু হাসপাতালে ব্যথায় কাতর গুলিবিদ্ধ শতাধিক মানুষ
পঙ্গু হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি-২ এর ২৪ নম্বর বেডে শুয়ে আছেন রাকিব হাসান। নবম শ্রেণিতে পড়া ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন মা রিনা বেগম। গেল জুলাই মাসের ২০ তারিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের চিটাগাং রোডে গুলিবিদ্ধ হয় রাকিব হাসান। হাঁটু বরাবর গুলি লাগায় প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তার বাম পা কেটে ফেলা হয়। ছেলের একটি পা কাটার পর থেকেই অশ্রুসিক্ত নয়নে মা বার বার ছেলের পায়ের দিকে তাকাচ্ছেন আর চোখের পানি মুছছেন।
রিনা বেগমের মতো অনেকেই তাদের আত্মীয়-স্বজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে ছুটে এসেছেন পঙ্গু হাসপাতালে। সবার চোখেমুখেই একরাশ দুঃখের ছাপ। পঙ্গু হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। মাতুয়াইল বয়েজ স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্র নাদিম ইসলামকে হাসপাতালে দেখতে এসেছে তার বন্ধু সাইমুর রহমান। জুলাই মাসের ১৯ তারিখে রায়েরবাগের কদমতলী থানার সামনে ৩টা গুলি লাগে নাদিমের গায়ে। গুলিবিদ্ধ পা নিয়ে বন্ধুকে ব্যথার যন্ত্রণার কথা বলতেই চোখ ছলছল করছে তার। সে দিনের ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করতেই নাদিম ইসলাম সময়ের আলোকে জানায়, আন্দোলনে গিয়ে পুলিশ যে সরাসারি এভাবে গুলি করবে বুঝতেই পারিনি। গুলি লাগার পর থেকে প্রতিটা রাতেই কাটে ব্যথার যন্ত্রণায়। তবে দেশের প্রয়োজনে এ ব্যথা কিছুই না উল্লেখ করে নাদিম জানায়, আমরা তো বেঁচে আছি, আমাদের অনেক বন্ধু মারা গেছে। আমরা এই হত্যার সঠিক বিচার চাই। অন্যায় অবিচার ঠেকাতে দরকার হলে বাকি জীবনটা দিয়ে দেব তাতেও আমার কোনো দুঃখ নেই।
নাদিমের ভাই সাইফুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, ডাক্তার অপারেশন করবে বলেছে, পা কাটতে হবে কি না এখনও জানি না। শুধু আমার ভাই না, এখানে থাকা গুলিবিদ্ধ এসব মানুষের ব্যথার যন্ত্রণা দেখলে খুবই কষ্ট লাগে, পা কাটার কথা শুনলে তো মনটা আরও খারাপ হয়ে যায়। চিকিৎসার খরচ নিয়ে তিনি বলেন, আগস্টের ১০ তারিখের পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে সব রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা কিছু কেনা লাগছে তারাই দিচ্ছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুধু ছাত্ররা নয়, আন্দোলনের কারণে গুলিবিদ্ধ হওয়া নানা পেশার মানুষ ভর্তি হয়েছে এই হাসপাতালে। যাত্রাবাড়ীতে অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন সজিব মিয়া। দর্জির কাজ করে কোনো রকম টেনেটুনে চলত তাদের সংসার। গেল ২০ জুলাই বাসা থেকে বের হয়ে দোকানে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। একমাত্র ছেলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন সজিবের মা। পঙ্গু হাসপাতালে ছেলের বেডের পাশেই বসে আছেন তিনি। মায়ের এমন অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করতেই সজিবের বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সময়ের আলোকে বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ, আমার পোলার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। সে এখন পঙ্গু। আমাদের এখন কী হবে? কে দেখবে আমাদের। এ সময় নিজের ছেলের নতুন পা লাগানোর পাশাপাশি সরকারকে আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন তিনি।
পঙ্গু হাসপাতালে দীর্ঘদিন সেবিকার কাজ করেন ইসরাত জাহান মুন্নি। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, জুলাই মাসের ১৮ তারিখের পর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৩০০ মানুষ ভর্তি হয়েছে এই হাসপাতালে। এর আগে একসঙ্গে কখনো এত গুলিবিদ্ধ রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। অনেকে সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও রোগীদের সেবা দিতে এখনও আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পঙ্গু হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ১, ২ এবং জরুরি বিভাগে এখনও ভর্তি রয়েছে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া শতাধিক মানুষ। ব্যথার কষ্ট নিয়ে পা কেটে ফেলে কিংবা গুলি বের করে অনেকই হাসপাতাল ছেড়েছেন। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন বিজয় লাভ করায় তাদের চোখেমুখে দেখা গেছে স্বস্তি।
রিনা বেগমের মতো অনেকেই তাদের আত্মীয়-স্বজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শুনে ছুটে এসেছেন পঙ্গু হাসপাতালে। সবার চোখেমুখেই একরাশ দুঃখের ছাপ। পঙ্গু হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র। মাতুয়াইল বয়েজ স্কুলে দশম শ্রেণির ছাত্র নাদিম ইসলামকে হাসপাতালে দেখতে এসেছে তার বন্ধু সাইমুর রহমান। জুলাই মাসের ১৯ তারিখে রায়েরবাগের কদমতলী থানার সামনে ৩টা গুলি লাগে নাদিমের গায়ে। গুলিবিদ্ধ পা নিয়ে বন্ধুকে ব্যথার যন্ত্রণার কথা বলতেই চোখ ছলছল করছে তার। সে দিনের ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করতেই নাদিম ইসলাম সময়ের আলোকে জানায়, আন্দোলনে গিয়ে পুলিশ যে সরাসারি এভাবে গুলি করবে বুঝতেই পারিনি। গুলি লাগার পর থেকে প্রতিটা রাতেই কাটে ব্যথার যন্ত্রণায়। তবে দেশের প্রয়োজনে এ ব্যথা কিছুই না উল্লেখ করে নাদিম জানায়, আমরা তো বেঁচে আছি, আমাদের অনেক বন্ধু মারা গেছে। আমরা এই হত্যার সঠিক বিচার চাই। অন্যায় অবিচার ঠেকাতে দরকার হলে বাকি জীবনটা দিয়ে দেব তাতেও আমার কোনো দুঃখ নেই।
নাদিমের ভাই সাইফুল ইসলাম সময়ের আলোকে বলেন, ডাক্তার অপারেশন করবে বলেছে, পা কাটতে হবে কি না এখনও জানি না। শুধু আমার ভাই না, এখানে থাকা গুলিবিদ্ধ এসব মানুষের ব্যথার যন্ত্রণা দেখলে খুবই কষ্ট লাগে, পা কাটার কথা শুনলে তো মনটা আরও খারাপ হয়ে যায়। চিকিৎসার খরচ নিয়ে তিনি বলেন, আগস্টের ১০ তারিখের পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে সব রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা কিছু কেনা লাগছে তারাই দিচ্ছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুধু ছাত্ররা নয়, আন্দোলনের কারণে গুলিবিদ্ধ হওয়া নানা পেশার মানুষ ভর্তি হয়েছে এই হাসপাতালে। যাত্রাবাড়ীতে অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন সজিব মিয়া। দর্জির কাজ করে কোনো রকম টেনেটুনে চলত তাদের সংসার। গেল ২০ জুলাই বাসা থেকে বের হয়ে দোকানে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। একমাত্র ছেলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন সজিবের মা। পঙ্গু হাসপাতালে ছেলের বেডের পাশেই বসে আছেন তিনি। মায়ের এমন অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করতেই সজিবের বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সময়ের আলোকে বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ, আমার পোলার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। সে এখন পঙ্গু। আমাদের এখন কী হবে? কে দেখবে আমাদের। এ সময় নিজের ছেলের নতুন পা লাগানোর পাশাপাশি সরকারকে আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন তিনি।
পঙ্গু হাসপাতালে দীর্ঘদিন সেবিকার কাজ করেন ইসরাত জাহান মুন্নি। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, জুলাই মাসের ১৮ তারিখের পর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৩০০ মানুষ ভর্তি হয়েছে এই হাসপাতালে। এর আগে একসঙ্গে কখনো এত গুলিবিদ্ধ রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। অনেকে সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরলেও রোগীদের সেবা দিতে এখনও আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পঙ্গু হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি ১, ২ এবং জরুরি বিভাগে এখনও ভর্তি রয়েছে আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া শতাধিক মানুষ। ব্যথার কষ্ট নিয়ে পা কেটে ফেলে কিংবা গুলি বের করে অনেকই হাসপাতাল ছেড়েছেন। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন বিজয় লাভ করায় তাদের চোখেমুখে দেখা গেছে স্বস্তি।