এমপক্স কতটা ভয়ংকর?
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। করোনা মহামারির পর বর্তমানে আরেক উদ্বেগের নাম এখন এমপক্স (মাঙ্কিপক্স)। প্রথমে এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছিল। কিন্তু এখন এটি মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্বের অনেক দেশে এমপক্সের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থাও জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিইএইচও)।
দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল শনিবার এই এমপক্স নিয়ে সতর্কতা দিয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর বলছে, এমপক্স মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। শরীরে এমপক্সের লক্ষণ দেখা দিলে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অথবা সংক্রমিত দেশ ভ্রমণের ২১ দিনের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দিলে ১৬২৬৩ ও ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেছে অধিদপ্তর।
এমপক্স কী?
এমপক্স একটি ভাইরাস জনিত প্রাণিজাত (Zoonotic) রোগ। ১৯৫৮ সালে ডেনমার্ক এ বানরের দেহে সর্বপ্রথম এ রোগ শনাক্ত হয় বলে একে মাঙ্কিপক্স বলা হয়। ১৯৭০ সালে আফ্রিকার একটি দেশে মানবদেহে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর আফ্রিকার কয়েকটি দেশে বিক্ষিপ্তভাবে এর সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়। তবে কেবল বানর নয়, ইঁদুরও এই ভাইরাসের বাহক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী (যেমন– গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগী, মহিষ) থেকে এ রোগ ছড়ায় না।
সাধারণ উপসর্গ
১. জ্বর হওয়া।
২. প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা করা।
৩. মাংসপেশিতে ব্যথা।
৪. অবসাদগ্রস্ততা ও ক্লান্তি লাগা।
৫. শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা।
৬. এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বরের পাশাপাশি শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি ওঠে। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায়।
৭. ফুসকুড়িগুলো অত্যন্ত চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। পরবর্তীতে পুঁজ ও ক্ষত সৃষ্টি হয়।
সাধারণত উপসর্গ শুরুর ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। উপসর্গ দেখা দিলে সবার আগে নিজেকে অন্যদের কাছ হতে আলাদা করুন। এরপর চিকিৎসক বা নিকটস্থ স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র অথবা হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন–ত্বকে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, মানসিক বিভ্রান্তি, চোখে প্রদাহ, এমনকি দৃষ্টি শক্তি লোপ পেতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এটি অত্যধিক শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে (দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি যেমন- অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস, কিডনি রোগী, ক্যানসারের রোগী, এইডস-এর রোগী, নবজাতক শিশু, গর্ভবতী নারী), এমনকি মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। সুতরাং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসা পদ্ধতি
এমপক্সের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে, ক্লেড-১ এবং ক্লেড-২। ২০২২ সালে এমপক্সের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে হালকা ক্লেড-২ ছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে ভাইরাসটির ধরনে পরিবর্তন আসে। মিউটেশনের ফলে ক্লেড ১বি নামক একটি ধরন সৃষ্টি হয়। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
এমপক্সের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এমপক্সের উপসর্গের ওপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে। তবে সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের মাঝেও এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
প্রতিকারের উপায়
সাধারণত স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের জন্য ব্যবহৃত টিকা এমপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর। অনেক গবেষণার পর এমপক্সের বিরুদ্ধে কাজ করে এমন তিনটি টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। তবে এর পরিমাণ সীমিত। এমপক্সের চিকিৎসা সহজলভ্য না হওয়ায় প্রতিরোধের পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এ জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসাকেন্দ্রে কিংবা বাড়িতে আক্রান্তদের সেবা দেওয়ার সময় গ্লাভস এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরতে হবে। অসুস্থ বা মৃত প্রাণীর সংস্পর্শ এড়ানো উচিত। এ ছাড়া মাংস রান্নার সময় সঠিকভাবে সিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি বিশ্বের অনেক দেশে এমপক্সের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থাও জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিইএইচও)।
দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল শনিবার এই এমপক্স নিয়ে সতর্কতা দিয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর বলছে, এমপক্স মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রামক রোগ। শরীরে এমপক্সের লক্ষণ দেখা দিলে অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অথবা সংক্রমিত দেশ ভ্রমণের ২১ দিনের মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা দিলে ১৬২৬৩ ও ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেছে অধিদপ্তর।
এমপক্স কী?
এমপক্স একটি ভাইরাস জনিত প্রাণিজাত (Zoonotic) রোগ। ১৯৫৮ সালে ডেনমার্ক এ বানরের দেহে সর্বপ্রথম এ রোগ শনাক্ত হয় বলে একে মাঙ্কিপক্স বলা হয়। ১৯৭০ সালে আফ্রিকার একটি দেশে মানবদেহে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর আফ্রিকার কয়েকটি দেশে বিক্ষিপ্তভাবে এর সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়। তবে কেবল বানর নয়, ইঁদুরও এই ভাইরাসের বাহক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী (যেমন– গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগী, মহিষ) থেকে এ রোগ ছড়ায় না।
সাধারণ উপসর্গ
১. জ্বর হওয়া।
২. প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, পিঠে ব্যথা করা।
৩. মাংসপেশিতে ব্যথা।
৪. অবসাদগ্রস্ততা ও ক্লান্তি লাগা।
৫. শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা।
৬. এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির জ্বরের পাশাপাশি শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুরুতে মুখে ফুসকুড়ি ওঠে। পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের তলায়।
৭. ফুসকুড়িগুলো অত্যন্ত চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। পরবর্তীতে পুঁজ ও ক্ষত সৃষ্টি হয়।
সাধারণত উপসর্গ শুরুর ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। উপসর্গ দেখা দিলে সবার আগে নিজেকে অন্যদের কাছ হতে আলাদা করুন। এরপর চিকিৎসক বা নিকটস্থ স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র অথবা হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। যেমন–ত্বকে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, মানসিক বিভ্রান্তি, চোখে প্রদাহ, এমনকি দৃষ্টি শক্তি লোপ পেতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এটি অত্যধিক শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে (দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি যেমন- অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস, কিডনি রোগী, ক্যানসারের রোগী, এইডস-এর রোগী, নবজাতক শিশু, গর্ভবতী নারী), এমনকি মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে। সুতরাং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসা পদ্ধতি
এমপক্সের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে, ক্লেড-১ এবং ক্লেড-২। ২০২২ সালে এমপক্সের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে হালকা ক্লেড-২ ছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে ভাইরাসটির ধরনে পরিবর্তন আসে। মিউটেশনের ফলে ক্লেড ১বি নামক একটি ধরন সৃষ্টি হয়। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
এমপক্সের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এমপক্সের উপসর্গের ওপর এর চিকিৎসা নির্ভর করে। তবে সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের মাঝেও এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
প্রতিকারের উপায়
সাধারণত স্মলপক্স বা গুটিবসন্তের জন্য ব্যবহৃত টিকা এমপক্স প্রতিরোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর। অনেক গবেষণার পর এমপক্সের বিরুদ্ধে কাজ করে এমন তিনটি টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। তবে এর পরিমাণ সীমিত। এমপক্সের চিকিৎসা সহজলভ্য না হওয়ায় প্রতিরোধের পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। এ জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চিকিৎসাকেন্দ্রে কিংবা বাড়িতে আক্রান্তদের সেবা দেওয়ার সময় গ্লাভস এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরতে হবে। অসুস্থ বা মৃত প্রাণীর সংস্পর্শ এড়ানো উচিত। এ ছাড়া মাংস রান্নার সময় সঠিকভাবে সিদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।